পাইকারি পণ্যের দাম সর্বদা পরিবর্তনশীল। পণ্যের বর্তমান দাম জানতে উপরের মোবাইল নম্বরে সাপ্লায়রকে সরসরি ফোন করুন।
বিদেশি সাপ্লায়ার কে LC বা TT তে দাম পরিশোধ করুন ৷ দেশী সাপ্লায়ার কে ক্যাশ অন ডেলিভারী বা ফেস টু ফেস ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন । কোন ভাবেই অগ্রিম টাকা পয়সা লেনদেন
করবেন না। কুরিয়ারে কন্ডিশনে পণ্য হাতে পেয়ে টাকা প্রদান করবেন৷
আপনার অসাবধানতায় কোন প্রকার প্রতারণার স্বীকার হলে আমরা দায়ী নই ৷
অনলাইনে পন্য ক্রয়ের আগে সমস্ত সিক্যুরিটি গ্রহন করে নিন ৷
আম আমাদের সবার অতি প্রিয় একটি ফল।আমাদের আশেপাশে হয়ত এমন মানুষ মনে হয়না যে খুঁজে পাওয়া যাবে, যে আম খেতে পছন্দ করে না। উপমহাদেশের সবচাইতে সুস্বাদু ফল হল আম। সাধারণত কাঁচা অবস্থায় এর রং সবুজ এবং পাকা অবস্থায় হলুদ রং আবার কিছু সময় লাল হয়ে থাকে। বাংলাদেশ এবং আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যে প্রজাতির আম চাষ হয় তার বৈজ্ঞানিক নাম হল Mangifera indica।
আমের বিভিন্ন ধরনের প্রজাতি পাওয়া যায় এবং প্রত্যেকের স্বাদ, গন্ধ ও স্বাস্থ্য উপকারিতাও আলাদা আলাদা। পাকা আম সবাই পছন্দ করে। কিন্তু পাকা আমের চেয়ে কাঁচা আমের স্বাস্থ্য উপকারিতা কম নয়। সবুজ আম বা কাঁচা আম স্বাদে টক বলে এর কথা আসলেই মুখে জল চলে আসে। কাঁচা আম কেন খাওয়া উচিৎ সে বিষয়ে জেনে আসি চলুন।
১। ভিটামিন সি এ সমৃদ্ধ
কাঁচা আম ভিটামিন সি এ পরিপূর্ণ থাকে যা শরীরের ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা পূরণে সাহায্য করে, ফলে হাড় হয় শক্তিশালী। এই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানটি আমাদের শরীরকে ইনফ্লামেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং রক্ত সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও কমায়। রক্তনালীগুলো ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী ও অনেকবেশি স্থিতিস্থাপক হয়ে ওঠে। ভিটামিন সি নতুন রক্ত কণিকা সৃষ্টিতে সাহায্য করে, আয়রনের শোষণে এবং রক্তপাতের প্রবণতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
২। মর্নিং সিকনেসের জন্য ভালো
গর্ভাবস্থার উপসর্গের তীব্রতা কমাতে এবং ঘন ঘন মর্নিং সিকনেস হওয়ার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে কাঁচা আম। নিয়মিত কাঁচা আম খেলে মর্নিং সিকনেস পুরোপুরি দূর হয়।
৩। কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের সমস্যা নিরাময় করে
যদি আপনার এসিডিটির সমস্যা হয় তাহলে আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করতে পারে কাঁচা আম। কাঁচা আম ফাইবারে সমৃদ্ধ এবং এতে ক্ষারের পরিমাণ বেশি থাকে বলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানেও সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা সমাধানের জন্য কাঁচা আমের সাথে মধু ও লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন।
৪। যকৃতের জন্য ভালো
কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা যকৃতের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করে। নিয়মিত সীমিত পরিমাণে কাঁচা আম খাওয়া যকৃতের সমস্যা দূরে রাখে, যেহেতু এটি পিত্তরসের নিঃসরণ বৃদ্ধি করে এবং অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে।
৫। রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে
সবুজ বা কাঁচা আম ইমিউনিটির বৃদ্ধিতে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। টিউবারকুলোসিস, অ্যানেমিয়া, কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়, পাইলস, ক্রনিক ডিসপেপসিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার ও কার্ডিয়াক রোগ প্রতিরোধ হয় নিয়মিত কাঁচা আম খেলে।
৬। এসিডিটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে
খাদ্যাভ্যাসের জন্য বেশিরভাগ মানুষই এসিডিটির সমস্যায় ভুগে থাকেন। কাঁচা আম খেলে এসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ঔষধ গ্রহণ ছাড়াই আপনার হজমে সাহায্য করবে কাঁচা আম।
৭। পানির ঘাটতি রোধ করে
গরমে আমাদের শরীর থেকে অনেক পানি বাহির হয়ে যায়। শরীরের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য এবং পানির ঘাটতি পূরণের জন্য সামান্য লবণ দিয়ে কাঁচা আম খান।
৮। পেটের সমস্যা দূর করে
গরমের সময় বেশিরভাগ মানুষের পেটে সমস্যা হতে দেখা যায়। ডায়রিয়া, আমাশয় ও বদহজমের মত সমস্যাগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে। খাদ্য হজমে সহায়তা করে কাঁচা আম। অন্ত্রকে পরিষ্কার করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় কাঁচা আম।
৯। ওজন কমায়
মিষ্টি আমের চেয়ে কাঁচা আমে চিনি কম থাকে বলে এটি ক্যালরি খরচে সাহায্য করে।
১০। স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া প্রতিরোধ করে
কাঁচা আম খেলে আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি সরবরাহ করে। স্কার্ভি, অ্যানেমিয়া ও মাড়ির রক্ত পড়া কমায় কাঁচা আম। কাঁচা আমের পাউডার বা আমচুর স্কার্ভি নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকরী।
১১। মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
সবুজ কাঁচা আম খাওয়া মাড়ির জন্য উপকারী। এটি শুধু মাড়ির রক্ত পড়াই বন্ধ করেনা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।
১২। দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়
কাঁচা আম আলফা ক্যারোটিন ও বিটা ক্যারোটিনের মত ফ্লাভনয়েড সমৃদ্ধ। এই সব উপাদান দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে ও দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়।
১৩। লিভারের সবচেয়ে ভালো বন্ধু
লিভারের রোগ নিরাময়ের একটি প্রাকৃতিক উপায় হচ্ছে কাঁচা আম। যখন কাঁচা আম চিবানো হয় তখন পিত্ত থলির এসিড ও পিত্ত রস বৃদ্ধি পায়। এর ফলে যকৃতের স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন পরিষ্কার করে।
১৪। ঘামাচি প্রতিরোধ করে
গ্রীষ্মকালের সবচেয়ে খারাপ শত্রু হচ্ছে ঘামাচি। ঘামাচির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় কাঁচা আম খাওয়া। কাঁচা আমে এমন কিছু উপাদান আছে যা সান স্ট্রোক হতে বাধা দেয়।
১৫। রক্তের সমস্যা দূর করে
শরীরের কোষকে উজ্জীবিত করে কাঁচা আম এবং রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে ও নতুন রক্ত কোষ গঠনে সহায়তা করে। বিভিন্ন রকমের রক্তের সমস্যা যাদের থাকে যেমন- রক্তশূন্যতা, ব্লাড ক্যান্সার, রক্তক্ষরণের সমস্যা ও টিউবারকোলোসিসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে কাঁচা আম।
১৬। এনার্জি প্রদান করে
আপনি কি জানেন কাঁচা আম আপনাকে প্রচুর এনার্জি দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে দুপুরের খাওয়ার পরে কাঁচা আম খেলে তন্দ্রা কাটিয়ে উজ্জীবিত হতে সাহায্য করে।
১৭। ঘাম কমায়
গরমের ঘাম থামতেই চায়না। কাঁচা আমের জুস খেয়ে ঘামের মাত্রা কমানো যায়। অতিরিক্ত ঘামের ফলে সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং আয়রন কমতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াকে প্রতিরোধ করে কাঁচা আম।
১৮। স্ট্রকের সমস্যা দূর করে
কাঁচা আমের সঙ্গে চিনি, জিরা এবং চিম্টি লবণ, মিশিয়ে সেদ্ধ করে জুস করে খেলে ঘামাচি রোধ করতে সাহায্য করে, এবং গ্রীষ্মকালে স্ট্রোকের ঝুকি হতে রক্ষা করে।
১৯। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
কাঁচা আমে পাকা আমের তুলনায় অধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি আছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শরীরকে রক্ষা করে।
আমের বীজের উপকারিতা-
আমের বীজের অনেক উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে আপনার স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য আমের বীজের তেল ব্যবহার করতে পারেন। আপনার স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য আমের বীজের তেল ফ্যাটি এসিড, খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিনের একটি ভালো উৎস। এর জন্য আপনাকে কোথাও যেতে হবে না। আপনি নিজে চাইলে আপনার বাড়িতে এই তেল তৈরি করতে পারবেন। প্রথমে আম বীজের বাইরের কোট ছারিয়ে নিন, তারপর নারিকেল, জলপাই, তিল বা সরিষার তেল দিয়ে মেশান। একটি পরিষ্কার কাচের বয়ামের বা পাত্রের মধ্যে ঢেলে সূর্যালোকে এ মিশ্রণটি এক সপ্তাহের জন্য রাখুন। চুল পড়া বা ধুসর চুল এড়াতে নিয়মিত প্রতিদিন এ মিশ্রণটি বা তেল টি আপনার চুলে ব্যাবহার করুন। এছাড়াও আপনার চুল কালো, লম্বা ও পুরু করতে এটি ব্যাবহার করুন। কিছু দিন পর দেখতে পারবেন, এটি খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
পরিশেষে
আমরা আম কাঁচা অথবা পাকা যে ভাবেই খাই না কেন তা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের গুণ আরও অনেক বেশি। আম আমাদের শরীরকে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে ডায়াবেটিস রোগীর আম খাওয়ায় সতর্ক থাকা উচিত। যাতে করে পরিমিত পরিমাণ আম খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। তবে সত্যিকার অর্থে অতিরিক্ত পরিমাণে আম খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর।এখন সব অঞ্চলে সব দেশে আম পাওয়া যায়। তার একটা কারন হল আম গাছ বিভিন্ন কৃষি-উপযোগী জলবায়ুতে জন্মাতে সক্ষম বলে বর্তমানে এটিকে পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলেই দেখা যায়।
তাই বলা যায় যে, শুধু আপেল নয়, দিনে একটি কাঁচা আম খেলেও ডাক্তারের থেকে দূরে থাকা যায়। কাঁচা আমের কষ মুখে লাগলে ও পেটে গেলে মুখে, গলায় ও পেটে ইনফেকশন হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
বাইরে এখন তীব্র রোদের আঁচ। সঙ্গে গা পোড়ানো গরম। এ সময় কাঁচা আমের এক গ্লাস শরবত সারা শরীরে এনে দিতে পারে প্রশান্তি। বাজারে এখন কাঁচা আম পাওয়া যাচ্ছে। দামও নাগালে। কাজেই কাঁচা আমের শরবতে প্রাণটাকে শীতল আর শরীরটাকে চাঙা করার সুযোগ রয়েছে।
পুষ্টিবিদেরা বলেন, কাঁচা বা পাকা দুই ধরনের আমই শরীরের জন্য ভালো৷ আম কাঁচা বা পাকা যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন, শরীরের জন্য এর কোনো নেতিবাচক দিক নেই বললেই চলে। কাঁচা আম বা আমের রসে পটাশিয়াম থাকায় প্রচণ্ড গরমে তা শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। কাঁচা আমের গুণ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদেরা বলেন, ১০০ গ্রাম কাঁচা আমে পটাশিয়াম থাকে ৪৪ ক্যালরি। এ ছাড়া ৫৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ও ২৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম থাকে। কাঁচা আমের আরও কিছু গুণের কথা জেনে নিন।
ওজন কমাতে পারে কাঁচা আম
যাঁরা ওজন কমাতে বা শরীরের বাড়তি ক্যালরি খরচ করতে চান, তাঁদের জন্য এখন আদর্শ ফল কাঁচা আম। পাকা মিষ্টি আমের চেয়ে কাঁচা আমে চিনি কম থাকে বলে এটি ক্যালরি খরচে সহায়তা করে।
অম্লতা দূর করে
বুক জ্বালাপোড়া বা অম্লতার সমস্যায় ভুগছেন? কাঁচা আম এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। অম্লতা কমাতে কাঁচা আমের এক টুকরো মুখে দিতে পারেন।
সকালের বমি ভাব দূর করে
অনেকেরই সকালে উঠে বমি বমি ভাব হয়। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা যাঁরা। এ সমস্যা দূর করতে পারে কাঁচা আম।
ঝিমুনি দূর করে
দুপুরে খাওয়ার পর এই গরমে কিছুটা ঝিমুনি ভাব দেখা দিতে পারে। কাঁচা আমে আছে প্রচুর শক্তি। দুপুরের খাওয়ার পরে কয়েক টুকরা কাঁচা আম খেলে ঝিমুনি দূর হয়।
যকৃতের সমস্যা দূর করে
যকৃতের রোগ নিরাময়ের প্রাকৃতিক বন্ধু হতে পারে কাঁচা আম। কয়েক টুকরো কাঁচা আম চিবানো হলে পিত্তরস বৃদ্ধি পায়। এতে যকৃতের স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং অন্ত্রের জীবাণু সংক্রমণ দূর হয়।
ঘামাচি প্রতিরোধ করে
গরমের সময় ঘামাচি একটি অস্বস্তিকর ব্যাপার। ঘামাচির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় কাঁচা আম খাওয়া। কাঁচা আমে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা সানস্ট্রোক হতে বাধা দেয়।
রক্তের সমস্যা দূর করে
কাঁচা আমে আয়রন বা লৌহ থাকায় রক্তস্বল্পতা সমস্যা সমাধানে বেশ উপকারী।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
খাদ্য হজমে সহায়তা করে কাঁচা আম। অন্ত্রকে পরিষ্কার করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় কাঁচা আম। টুকরো করে আম কেটে লবণ মাখিয়ে তা মধুসহযোগে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
শরীরে লবণের ঘাটতি দূর করে
গরমে অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও লৌহ বের হয়ে যায়। কাঁচা আমের জুস শরীরের এই ঘাটতি দূর করে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে
কাঁচা আম খেলে ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে কাঁচা আম।
স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া রোধ করে
কাঁচা আম শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি জোগাতে পারে। স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া কমায় কাঁচা আম। আমচুর স্কার্ভি নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকরী। নিশ্বাসের দুর্গন্ধ ও দাঁতের ক্ষয় রোধেও সহায়তা করে কাঁচা আম।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
কাঁচা আম খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
শরীর ঠান্ডা থাকে
কাঁচা আমে পটাশিয়াম থাকার কারণে তা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে৷ এ কারণে শরীরে ঘাম কম হয়। গরমে ক্লান্তিও দূর হয় ৷
চুল ও ত্বক উজ্জ্বল করে
প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে তা চুল ও ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে ৷
হজম ভালো হয়
গ্যালিক অ্যাসিড থাকার কারণে তা হজম-প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে৷
সতর্কতা
কথায় আছে, অতিরিক্ত কোনো কিছু ভালো নয়। কাঁচা আম খাওয়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা আম খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ কাঁচা আমের কষ মুখে লাগলে ও পেটে গেলে মুখ, গলা ও পেটে সংক্রমণ হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সাবধান।
তথ্যসূত্র: বারডেম, হেলথ সাইট, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
কাঁচা আমের আচার ১০ টি রেসিপি একসাথে
১) টক-ঝাল-মিষ্টি আমের আচার????
উপকরণঃ
কাঁচা আম ১ কেজি
সিরকা আধা কাপ
সরিষার তেল এক কাপ
রসুনবাটা দুই চা-চামচ
আদাবাটা দুই চা-চামচ
হলুদ্গুড়া দুই চা-চামচ
চিনি তিন টেবিল-চামচ
লবণ পরিমাণমতো।
মসলার জন্যঃ মেথি গুঁড়া এক চা-চামচ, জিরা গুঁড়া দুই চা-চামচ, মৌরি গুঁড়া এক চা-চামচ, রাঁধুনি গুঁড়া দুই চা-চামচ,সরষেবাটা তিন টেবিল-চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া দুই টেবিল-চামচ, কালো জিরা গুঁড়া এক চা-চামচ।
প্রণালিঃ খোসাসহ কাঁচা আম টুকরো করে লবণ দিয়ে মেখে একরাত রেখে দিতে হবে। পরের দিন ধুয়ে আদা, হলুদ, রসুন মাখিয়ে কিছুক্ষণ রোদে রাখুন। এরপর সসপ্যানে আধা কাপ তেল দিয়ে আমগুলো নাড়া-চাড়া করতে থাকুন, গলে গেলে নামিয়ে ফেলুন। অন্য একটি সসপ্যানে বাকি তেল দিয়ে চিনিটা গলিয়ে ফেলুন। কম আঁচে চিনি গলে গেলে সব মসলা দিয়ে (মৌরি,মেথি গুঁড়া ছাড়া) আম কষিয়ে নিতে হবে। আম গলে গেলে মৌরি গুঁড়া, মেথি গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
২) আম-রসুনেরআচার
উপকরণঃ
খোসা ছাড়া কাঁচা আমের টুকরা দুই কাপ
সরিষার তেল এক কাপ
রসুনছেঁচা এক কাপ
মেথি এক টেবিল-চামচ
মৌরি এক টেবিল-চামচ
জিরা এক টেবিল-চামচ
কালো জিরা দুই চা-চামচ
সিরকা আধা কাপ
হলুদগুঁড়া দুই চা-চামচ
শুকনা মরিচ ১০-১২টি
চিনি দুই টেবিল-চামচ
লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালীঃ আমের টুকরো গুলোতে লবণ মাখিয়ে একরাত রেখে দিতে হবে। পরের দিন ধুয়ে কয়েক ঘণ্টা রোদে দিতে হবে। রেসিপির সব মসলা মিহি করে বেটে নিতে হবে। এরপর চুলায় সসপ্যানে তেল দিয়ে বসাতে হবে। তেল গরম হলে রসুন দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়িয়ে, তারপর বাটা মসলা দিয়ে নাড়তে হবে। তারপর আম দিয়ে নাড়িয়ে নিতে হবে। কিছুক্ষণ রান্না করার পর আম নরম হলে, চিনি দিয়ে নাড়িয়ে নামাতে হবে। এরপর আচার ঠাণ্ডা হলে বোতলে ভরে, বোতলের মুখ পর্যন্ত তেল দিয়ে ঢাকতে হবে। এরপর কয়েকদিন রোদে দিতে হবে।
৩) আম-পেঁয়াজের ঝুরি আচার
উপকরণঃ
কাঁচা আমের ঝুরি এক কাপ
পেঁয়াজ কুচি এক কাপ
জিরাগুঁড়া দুই চা-চামচ
কালো জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ
সরষেগুঁড়া এক টেবিল-চামচ
মরিচগুঁড়া দুই চা-চামচ
সরিষার তেল আধা কাপ
লবণ পরিমাণ মতো।
প্রণালীঃ আমের ঝুরি এবং পেঁয়াজের কুচি আলাদাভাবে একদিন রোদে ভালোভাবে শুঁকিয়ে নিতে হবে। তারপরের দিন বাকি সব উপকরণগুলি দিয়ে, ভালোভাবে হাত দিয়ে মাখিয়ে বোতলে ভরে কয়েক দিন রোদে দিতে হবে।
৪)আমের নোনতা আচার
উপকরণ
আমের টুকরো ৪ কাপ,
লবণ ২ চামচ,
কালোজিরার গুঁড়া ১ চা-চামচ,
শুকনা মরিচ ৩টা,
মৌরি গুঁড়া আধা চা-চামচ,
হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ,
পাঁচফোড়ন ১ চা- চামচ,
সরষের তেল ২ কাপ।
প্রণালি
আমের খোসা ফেলে লম্বা টুকরো করে লবণ পানিতে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পানি ঝরিয়ে এতে হলুদ ও প্রয়োজনমতো লবণ দিয়ে কড়া রোদে কয়েক ঘণ্টা রেখে মৌরি গুঁড়া ও কালোজিরার গুঁড়া দিয়ে আবার রোদে দিন।
শুকনা নরম আম বোতলে ঢুকিয়ে নিন। গরম তেলে পাঁচফোড়ন ভেজে তেল ও পাঁচফোড়ন আমের বোতলে ঢেলে দিয়ে কয়েক দিন বোতলের মুখে পাতলা কাপড়ে বেঁধে রোদে দিন।
৫)খোসাসহ আমের আচার????
উপকরণ
আম ১০টা,
সরষে বাটা ২ চামচ,
পাঁচফোড়ন বাটা ১ চামচ,
সিরকা আধা কাপ,
হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ,
মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ,
লবণ স্বাদমতো,
চিনি ১ কাপ,
তেজপাতা ২টা,
শুকনা মরিচ ৩টা,
সরষের তেল ১ কাপ।
প্রণালি
আম খোসাসহ টুকরো করে হলুদ ও লবণ মাখিয়ে ৮-১০ ঘণ্টা রোদে দিন। এবার হলুদ, মরিচ, সরষে, পাঁচফোড়ন ও অর্ধেক সিরকা আমের সঙ্গে মিশিয়ে আবার রোদে দিন।
শুকিয়ে এলে বাকি সিরকা, চিনি, তেজপাতা ও শুকনা মরিচ দিয়ে বোতলে ঢুকিয়ে রোদে দিন। তেল ভালোভাবে গরম করে ঠান্ডা হলে আচারের বোতলে ঢেলে কয়েক সপ্তাহ রোদে দিন।
৬)আমের মোরব্বা
উপকরণ
আম ১০টা,
চিনি ২ কাপ,
পানি ১ কাপ,
লবণ আধা চা-চামচ,
এলাচ ৩টা,
দারচিনি ২ টুকরো,
তেজপাতা ২টা,
চুন ১ চা-চামচ।
প্রণালি:
আমের খোসা ফেলে দুই টুকরো করে নিন। এবার টুথপিক দিয়ে আমের টুকরো ভালোভাবে ছিদ্র করে নিন। চুনের পানিতে আম ৭-৮ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। আম তুলে পরিষ্কার পানিতে কয়েকবার ধুয়ে নিন।
এবার চিনির সিরায় সব উপকরণ দিয়ে ফুটে উঠলে আম ছেড়ে দিন। অল্প আঁচে রাখুন। আম নরম হলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে বোতলে ঢুকিয়ে রাখুন।
৭)আমের ঝাল আঁচার
উপকরণঃ
আম ১ কেজি, সিরকা ১ কাপ, সরিষার তেল দেড় কাপ, সরিষা বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, মরিচ বাটা ১ টেবিল চামচ, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, পাঁচফোড়ন গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, আস্ত পাঁচফোড়ন আধা চা চামচ, লবণ ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ টে চামচ, রসুন কোয়া ১৬টি, কাঁচামরিচ ১০টি, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ।
কিভাবে তৈরি করবেন:
আম খোসাসহ ছোট ছোট টুকরা করে কেটে ১ টেবিল চামচ লবণ মাখিয়ে ভালো করে ধুয়ে পানি নিংড়ে নিতে হবে।অল্প হলুদ, লবণ মাখিয়ে এক দিন রোদে দিতে হবে। কড়াইতে তেল গরম হলে আস্ত পাঁচফোড়ন ছাড়তে হবে। পাঁচফোড়ন ভাজা সুগন্ধ বের হলে রসুন বাটা, আদা কুচি দিয়ে ১ মিনিট নাড়তে হবে। মরিচ, হলুদ, লবণ ও সামান্য সিরকা দিয়ে ভালো করে কষিয়ে আম দিয়ে নাড়তে হবে। আম আধা সেদ্ধ হলে বাকি সিরকা, চিনি, সরিষা বাটা, কাঁচা মরিচ, রসুন কোয়া দিয়ে আরও ১৫ মিনিট অল্প আঁচে নাড়তে হবে।ভাজা পাঁচফোড়ন গুঁড়ো দিয়ে ২ মিনিট নেড়ে আচার চুলা থেকে নামাতে হবে। আচার ঠান্ডা হলে কাচের বয়ামে রেখে দিন।
৮.) রেসিপি - কাশ্মিরি আচার
উপকরণ: আম ৫ কেজি। চিনি ৩ কেজি। ভিনিগার ১ বোতল (৬৫০ মি.লি.)। শুকনামরিচ ২৪, ২৫টি। আদাকুচি ৬ টেবিল-চামচ। লবণ স্বাদ মতো।
পদ্ধতি: আম ছিলে ধুয়ে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর কিউব করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। শুকনামরিচ কাঁচি দিয়ে চিকন করে কেটে দানা বাদ দিন। আদা চিকন করে কুচি করুন। তারপর চুলায় হাঁড়িতে চিনি ও ভিনিগার দিয়ে সব বসান।
যদি আচারে লাল লাল ভাব আনতে চান তবে চিনি কিছুটা কমিয়ে খেজুরের গুড় দিতে পারেন। এরপর শুকনা মরিচ, আদা ও লবণ দিতে হবে।
জ্বাল দিয়ে ঘন হয়ে আসলে, তাতে আমের টুকরা দিয়ে দিন। সিরা ঘন হয়ে আসলে চুলার আঁচ কিছুক্ষণ কমিয়ে রাখতে হবে।
আম সিদ্ধ হয়ে গলে যাওয়ার আগেই নামিয়ে কাচের বোতলে ভরে রাখুন। ঠাণ্ডা হলে বোতলের মুখ বন্ধ করে রেখে দিন।
৯)আচার ও চাটনি - কাঁচাআমের আচার
উপকরণ
কাঁচাআম আধা কেজি। দেশিপেঁয়াজ-কুচি ৪ কেজি। কালোজিরা ১ চা-চামচ। শুকনা মরিচ ৮টি। তেঁতুল ১ টেবিল-চামচ। চিনি ৪ টেবিল-চামচ। রসুনের কোয়া ১০টি। লবণ স্বাদমতো। সরিষার তেল পরিমাণমতো। কাঁচের বোতল আচার রাখার জন্য।
পদ্ধতি
পেঁয়াজ ছুলে নিন। আমের ছোকলা ছিলে পরিষ্কার করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। এরপর পেঁয়াজ এবাং আম মিহিকুচি করে কাটুন। একটা ডালায় আম আর পেঁয়াজের কুচি নিয়ে তাতে কালোজিরা, শুকনা মরিচ, রসুনের কোয়া, তেঁতুল, চিনি, লবণ আর অল্প সরিষার তেল দিয়ে মাখিয়ে তিন থেকে চার দিন রোদে শুকাতে হবে।
বাদামি রং এবং ঝরঝরে হলে কাঁচের জারে ভরে সরিষার তেল দিয়ে আবার রোদে দিতে হবে।
১০) আমসত্ত্ব
উপকরণ : পাকা আম এক কেজি
চিনি দুই কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. পাকা আম খোসা ছড়িয়ে একটু চটকে নিন।
২. হালকা আঁচে একটু সিদ্ধ করে নিন।
৩. আম মিষ্টি না টক সে অনুযায়ী চিনি মিশিয়ে দিন।
৪. একটি গোল থালায় তেল মাখিয়ে একপ্রস্থ আম লেপে দিয়ে রোদে দিন। শুকিয়ে গেলে আবার একপ্রস্থ দিন। এভাবে যতটুকু মোটা করতে চান সে অনুযায়ী আম দিন।
৫. ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে কৌটায় ভরে রেখে দিন। রোদের ব্যবস্থা না থাকলে গ্যাসের চুলার নিচে রেখেও আমসত্ত্ব করা যাবে।
কাঁচা আমে কোন কোন এসিড থাকে?
অক্সালিক এসিড, সাইট্রিক এসিড, ম্যালিক এসিড ও সাকসেনিক এসিড।
অক্সালিক এসিড, সাইট্রিক এসিড, ম্যালিক এসিড ও সাকসেনিক এসিড। কাঁচা আম আমাদের দেহের রক্ত পরিষ্কার করে। এর ভিটামিন সি-এই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানটি আমাদের শরীরকে ইনফ্লামেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং রক্ত সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও কমায়।
4.1 average based on all reviews.